তথ্যপ্রযুক্তি সারা পৃথিবী এগিয়ে চলেছে আমরা এখন আর একথা বলি না বরং আমরা বলি যে, সারা পৃথিবী আজ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের দেশে তথ্য প্রযুক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোক্তারা নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়ছেন। ই কমার্স তার মধ্যে অন্যতম। অনলাইনে, ফেসবুকে কেনাকাটার ক্ষেত্রে হরদম ক্রেতাদের নানা সমস্যার কথা শোনা যায়। শোনা যায় প্রতারণার নানা ঘটনাও। ফলে বিশ্বাসের একটা সংকট এখানে রয়ে গেছে এখনো। এটা পুরো ই কমার্স ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের জন্য একটা বাঁধা। বর্তমানে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এবং ক্যাশঅন ডেলিভারীতে যে সমস্যা হচ্ছে অনলাইনে লেনদেনের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো অনেকাংশে দূর হতে পারে।
আসুন দেখি সমস্যাগুলো কি কি?
১.বিক্রেতারা পন্য পাঠানোর আগেই ক্রেতার কাছ থেকে টাকা চান বলে ক্রেতারা অনেকে অগ্রীম অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানান, ফলে অনেক সময় লেনদেনটা হয়না, আবার কখনো কখনো এভাবে প্রতারণার ঘঠনাও ঘটে থাকে। হতে পারে পন্য না পাওয়া অথবা ভুল পন্য পাওয়া।
২. আর ক্যাশ অন ডেলিভারীর ক্ষেত্রে পেমেন্ট দেয়া হয় পন্য হাতে পাওয়ার পর কিন্তু এক্ষেত্রে বিপদে পড়ে যান বিক্রেতা নিজেই। প্রথমত পন্য হাতে পেয়ে অনেকে মত পাল্টান, বলেন যে তারা পন্য নেবেন না, আবার অনেকে টাকা খরচ করে ফেলেন তারপর ডেলিভারীম্যানকে বার বার ডেট দিতে থাকেন। অনেকে আবার বাসা থেকে এদিক ওদিক চলে যান ফলে টাকা দিয়ে পন্যটি গ্রহণ করতে পারে ন না। এদিকে শনির দশা কুরিয়ার কোম্পানী আর বিক্রেতার। কখনো কখনো ঝগড়া শুরু হয়ে যায়, কাস্টমার বলে ডেলিভারী ম্যান আসেনি, ডেলভারী ম্যান বলে কাস্টমার ফোন ধরেনি। রীতিমত সালিস দরবার বসে যায়।
এই সমস্যাগুলো আমরা অনায়াসে এড়িয়ে যেতে পারি অনলাইনে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করার মাধ্যমে। আসুন এবার দেখা যাক কিভাবে এটা সম্ভব।
১. যেহেতু একজন বিক্রেতা ক্রেতাকে বলেন যে টাকাটা অনলাইনে প্রদান করতে হবে বা অনলাইনে প্রদান করা ভালো তখনি ক্রেতা বুঝতে পারেন উদ্যোক্তা একজন সত্যিকার ব্যবসায়ী তার বিজনেস লাইসেন্স ব্যাংক একাউন্ট এবং পেমেন্ট গেটওয়ে এগ্রিগেটর রয়েছে। সূতরাং প্রতারণার সম্ভাবনা এখানে নেই বললেই চলে।
২. আবার যেহেতু ক্লায়েন্ট কার্ডে পেমেন্ট করেছেন সূতরাং বিক্রেতারও মূল্যপ্রাপ্তি নিয়ে কোনো টেনশন বা ভয় থাকে না।
৩. সবচে বড়ো কথা হলো কাস্টমার যদি মনে করেন তিনি প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন, তাহলে তিনি অভিযোগ করতে পারেন। তার এই অভিযোগরে কারণে পেমেন্ট গেটওয়ে ফার্ম তার পরিশোধিত অর্থ আর বিক্রেতাকে পরিশোধ করবেন না। তারা বরং উভয় পক্ষকে বিষয়টি মীমাংসা করার পরামর্শ দেন। এতে করে যৌক্তিক অভিযোগ প্রকাশের মাধ্যমে আপনার টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সবচে বড়ো কথা প্রতারণার সুযোগ নেই বিধায় উভয় পক্ষই সতর্ক থাকে।
মজার ব্যাপার হলো কার্ডে পেমেন্ট করার মাধ্যমে ডেলিভারী সমস্যারও সমাধান হয়ে যায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ ভাগ। সেটা কিভাবে হয় দেখুন। প্রথমত ক্রেতা চিন্তা করে যে তিনি পেমেন্ট দিয়েছেন সূতরাং তাকে পন্যটি গ্রহণ করতে হবে, সূতরাং তিনি যেভাবে হোক সেটি পেতে চায় এবং ডেলিভারীম্যানকে সহায়তা করে।
আবার অন্যদিকে বিক্রেতারও ভয় থাকে যে ডেলিভারী ব্যর্থ হলে তাকে টাকা ফেরত দিতে হবে। বা তিনি টাকাটা শেষ পর্যন্ত পাবেন না। ফলে তারও সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে যেকোনোভাবে পন্যটি ক্রেতার হাতে পৌছে ধেয়ার।
এভাবে অনলাইনে লেনদেনের মাধ্যমে আমরা বহুমুখী নিরাপত্তা ও বিশ্বস্ততার সুবিধাগুলো পেতে পারি। এখন আমরা যারা উদ্যোক্তা রয়েছি আমাদের উচিত বিভিন্নভাবে ক্রেতাদেরকে ব্যাংকের মাধ্যমে বা অনলঅইনে কেনাকাটা করতে উৎসাহিত করা। বেশী বেশী ক্রেতা অনলাইনে কেনাকাটা করলে পুরো লেনদেন পক্রিয়া যেমন নো টেনশন হবে তেমনি অনলাইন কেনাকাটা নিরাপদ।
– জাহাঙ্গীর আলম শোভন